শিবালয় উপজেলায় পাটুরিয়া ১ ও ২ নং ফেরিঘাটের সরকারি জায়গা দখলে: নেতৃত্বে সইরাচারী আরিফ কাজী


নান্নু মিয়া, স্টাফ রিপোর্টারঃ

মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নৌ-যান চলাচলের কেন্দ্রবিন্দু পাটুরিয়া ১ নম্বর ও ২ নম্বর ফেরিঘাটে অবস্থিত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (BIWTA) ফোরশোর এলাকা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। অভিযোগের তীর মূলত পাঁচজন স্থানীয় বাসিন্দার দিকে, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন সইরাচারী স্বভাবের আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী আরিফ কাজী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আরিফ কাজী এই এলাকায় নিজেকে প্রভাবশালী আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে এই দখল ও অবৈধ বাণিজ্যে সক্রিয়ভাবে জড়িত মন্তাজ মাস্টার ও জসিম। এদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে একটি দখলবাজ সিন্ডিকেট, যারা পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ১ ও ২ নম্বর এলাকার সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে এবং বালু লোড-আনলোডের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

BIWTA সূত্র জানায়, এই এলাকা তাদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি জমি, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহনের চলাচল হয়। এই অবৈধ দখলের কারণে সাধারণ মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং সরকার হারাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব।

BIWTA এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম শেখ সাংবাদিকদের জানান, “অবৈধ বালির গদিগুলি আমরা খুব শিগগিরই উচ্ছেদ করবো। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়েছে, অনুমতি পেলেই আমরা অভিযান শুরু করবো।”

শিবালয়ের সহকারী ভূমি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এসএম ফয়েজ জানান, “রমজান মাসে আমরা অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছি, তবে রাজস্ব এবং ট্রেড লাইসেন্সের বিষয় BIWTA-এর আওতাধীন।”উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, “এই জায়গাটি BIWTA-এর নিয়ন্ত্রণাধীন। তারা যদি সহযোগিতা চায়, আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করবো।” পরিবেশ এবং ট্রেড লাইসেন্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কোনো স্থায়ী স্থাপনা ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া যাবে না।”জনসাধারণ প্রশ্ন তুলছে—এই অবৈধ কার্যক্রমের পেছনে কারা আছে? কেন প্রশাসন ও BIWTA নিরব? ফেরিঘাটের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবৈধ সিন্ডিকেটের এমন দৌরাত্ম্য কেন?

এই প্রতিবেদনের মূল বার্তা—পাটুরিয়া ফেরিঘাটের সরকারি জায়গা যেন ভূমি দস্যুদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত না হয়। আরিফ কাজীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই চক্রের বিরুদ্ধে কি এবার প্রশাসন সত্যিকার পদক্ষেপ নেবে? (এই প্রতিবেদন চলমান)।

Post a Comment

0 Comments